মঙ্গলবার, ৩ মে, ২০১৬

ব্লগার ও লেখক হত্যা - ব্লগারদের যৌথ বিবৃতি


আমরা, গভীর বেদনা ও উদ্বেগের সাথে লক্ষ্য করছি যে বাংলাদেশে মুক্তমনা, নাস্তিক লেখক, প্রকাশক, ব্লগার, অনলাইন অ্যাক্টিভিস্ট এবং ধর্মীয় ভিন্নমতাবলম্বী ব্যক্তি ও বিভিন্ন শ্রেণিপেশার ব্যক্তিবর্গ ইসলামি জঙ্গিবাদের হাতে একের পর এক হত্যা ও আক্রমণের শিকার হলেও এ প্রসঙ্গে বাংলাদেশ সরকারের ভূমিকা শুরু থেকেই প্রশ্নবিদ্ধ। সরকারের পক্ষ থেকে এ বিষয়ে কোনো কার্যকর আইনি ও প্রশাসনিক উদ্যোগ নেবার পরিবর্তে নিহত ও আক্রান্ত ব্যক্তিবর্গের উপর দায় চাপানোর এক নতুন সংস্কৃতি চালু করা হয়েছে। সংবিধান অনুযায়ী দেশের সকল নাগরিক আইন দ্বারা সুরক্ষা লাভের অধিকারী এবং সবার মত প্রকাশের অধিকার থাকা সত্ত্বেও গত ১৪ এপ্রিল ২০১৬ মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা প্রকাশ্যে বলেছেন, কেউ ধর্মের সমালোচনামূলক লেখালেখির কারণে খুন হলে সরকার তার দায়িত্ব নেবে না। এই ঘোষণার দ্বারা নাগরিকদের নিরাপত্তা প্রদানের দায়িত্ব অস্বীকার করে প্রধানমন্ত্রী সংবিধান এবং নাগরিকদের প্রতি তাঁর অঙ্গিকার থেকে স্পষ্টত সরে গেছেন এবং মত প্রকাশের স্বাধীনতার প্রশ্নে তিনি পক্ষপাতদুষ্ট অবস্থান গ্রহণ করেছেন।
জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্র, অনলাইন এক্টিভিস্ট খুন হলে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান বলেন, “সে ধর্ম নিয়ে আপত্তিকর লেখালেখি করত কী না তা খতিয়ে দেখা প্রয়োজন... আগের যে হত্যাকাণ্ডগুলো হয়েছে তাদের ব্লগ যদি দেখেন, এভাবে মানুষের ধর্মে আঘাত দেওয়া, বিশ্বাসে আঘাত দেওয়া, পৃথিবীর কোনো দেশেই তা গ্রহণযোগ্য নয়”। ইসলামি জঙ্গীদের আক্রমণে সমকামী আন্দোলনের দু’জন কর্মী খুন হলে একই কায়দায় তিনি মন্তব্য করেন “আমাদের সমাজে সমকামিতা মানানসই নয়”। পুলিশের মহাপরিদর্শক জনাব এ কে এম শহীদুল হক গত ২৬ এপ্রিল ব্লগারদের নিরাপত্তা প্রদান এবং গুপ্ত ঘাতকচক্র দমনে তার বাহিনীর অপারগতা প্রকাশ করে তিনি বলেন, “পুলিশ ঘরে ঘরে পাহারা দিতে পারবে না, নিজেদের নিরাপত্তার দায়িত্ব নিজেদেরকেই নিতে হবে"। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ও পুলিশ প্রধানের এহেন বক্তব্য দায়িত্বহীন, অপেশাদারসুলভ এবং উদ্বেগজনক। এছাড়াও সম্প্রতি ঢাকা মহানগর পুলিশ কমিশনার মোঃ আছাদুজ্জামান মিয়া স্বীকার করেছেন যে, তাদের নজরদারীতে থাকা লেখক অভিজিৎ রায় ও প্রকাশক ফয়সল আরেফিন দীপনের কয়েকজন খুনী দেশ ছেড়ে পালিয়ে গেছে! পুলিশের নজরদারীতে থাকা খুনীদের দেশ ছেড়ে পালানোর ঘটনা থেকে যৌক্তিকভাবেই সন্দেহ হয় যে, ব্লগার হত্যাকারীদের গ্রেফতার ও বিচারে সরকার তথা আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীসমূহের ইচ্ছা ও আগ্রহের অভাব রয়েছে। এছাড়া সরকার ও প্রশাসনের গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিবর্গের এই ধরনের মন্তব্য ও বিবৃতি উগ্র সাম্প্রদায়িকতা এবং জঙ্গীবাদকে উস্কে দেয়ার পাশাপাশি হত্যাকাণ্ড অব্যাহত রাখতে খুনিচক্রকে অধিক মাত্রায় উৎসাহিত করছে। অন্য দিকে ভিন্নমত ও ভিন্নমতাবলম্বীদের নিশ্চিহ্ন করার অপচেষ্টা পরিলক্ষিত হচ্ছে। দেশের বিভিন্ন স্থানে সংখ্যালঘুদের উপর হামলাকারীকে ‘মানসিক ভারসাম্যহীন’ হিসেবে দেখিয়ে দায় থেকে মুক্তি দেয়া হচ্ছে; অথচ ধর্মীয় সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের মানুষদের ইসলাম নিয়ে কথিত কটুক্তির অভিযোগ এনে জেলে ভরা হচ্ছে।

হেফাজতে ইসলাম এর আমীর আল্লামা আহমদ শফি যখন প্রকাশ্যে “নাস্তিকদের কতল করা ওয়াজিব হয়ে গেছে” বলে ফতোয়া দেন এবং সারাদেশে বিভিন্ন ওয়াজ মাহফিল, খুৎবায় নানাস্তরের জঙ্গীবাদী ইমাম, আলেম, খতিবরা নাস্তিকদের খুনের প্রকাশ্য ফতোয়া দিতে থাকেন, তখনও আমরা সরকারকে কোনো আইনগত পদক্ষেপ গ্রহণ করতে দেখি না। একই সময়ে ক্ষমতাসীন আওয়ামীলীগের অঙ্গসংগঠন পরিচয় দিয়ে ‘আওয়ামী ওলামালীগ’ সাম্প্রদায়িক রাজনীতির বিস্তারে পাল্লা দিয়ে কাজ করছে। হেফাজতে ইসলামের সাথে সরকার ও ক্ষমতাসীন আওয়ামীলীগের উচ্চ পর্যায়ের ব্যক্তিবর্গের যোগাযোগ এবং তাদের নানাভাবে সহযোগিতা করার বিষয়টিও আমাদের দৃষ্টিগোচর হয়েছে। উপরন্তু ক্ষমতাসীন আওয়ামীলীগ উগ্র মৌলবাদীদের সাথে দফায় দফায় মুক্তিযুদ্ধের চেতনা বিরোধী চুক্তি করছে এবং রাষ্ট্র ও সমাজকে সাম্প্রদায়িকীকরণের দিকে নিয়ে যাচ্ছে। আওয়ামীলীগসহ ক্ষমতাসীন ১৪ দল তথা মহাজোট এবং তাদের সহযোগী সংগঠনসমূহ এসকল হত্যা-খুনের প্রতিকার প্রশ্নে নীরব থাকছে অথবা দলীয় ও জোট নেত্রীর দেখানো পথে আক্রান্তদেরই দোষারোপ করা হচ্ছে। পাশাপাশি, সংঘটিত হামলাগুলোর দায় আনসারুল্লাহ বাংলা টিম বা আনসার-আল ইসলাম (আল-কায়েদার ভারত উপমহাদেশীয় নেটওয়ার্কের বাংলাদেশ শাখা) এবং আইএস স্বীকার করলেও স্বয়ং প্রধানমন্ত্রী ওস্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বাংলাদেশে আইএস, আল কায়দা প্রভৃতি জঙ্গী সংগঠনের উপস্থিতিকে অব্যাহতভাবে অস্বীকার করে চলেছেন, যা মূলত সত্যকে আড়াল করে সরকারের উগ্র মৌলবাদ ও জঙ্গীবাদের সাথে সমঝোতা করে চলার কৌশল বলে আমরা মনে করি। অপরদিকে প্রধান বিরোধীদল বিএনপি বাংলাদেশের স্বাধীনতার শত্রু জামায়াতে ইসলামীসহ প্রায় ২০ টি ইসলামপন্থী দলের সাথে রাজনৈতিক জোট গঠন করেছে, যাদের অধিকাংশই জঙ্গীবাদের মদদদাতা কিংবা সরাসরি যুক্ত। ফলে সরকারি কিংবা বিরোধীদল কোনো পক্ষ থেকেই রাজনৈতিক ও সাংস্কৃতিকভাবে জঙ্গীবাদ মোকাবেলার কোনও উদ্যোগ দেখা যাচ্ছে না।

জঙ্গী গুপ্তঘাতকদের আক্রমণের পাশাপাশি সরকার লেখক, প্রকাশক, ব্লগার ও মুক্তচিন্তার মানুষদের গ্রেফতার ও হয়রানি করছে। ‘তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি আইন ২০০৬’ (২০১৩ সালে সংশোধিত) এর ৫৭ ধারা প্রয়োগ করে লেখক ও ব্লগারদের মুখ বন্ধ করে দেয়ার চেষ্টা চলছে। ফলে দেশে মত প্রকাশের স্বাধীনতা এবং চিন্তা ও বিবেকের স্বাধীনতা ভয়াবহ হুমকীর মুখে পড়েছে। ২০১৩ সালে হেফাজত ইসলামের দাবির প্রেক্ষিতে ৪ জন ব্লগারকে ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাতের কথিত অপরাধে ৫৭ ধারায় গ্রেফতার করা হয়। হেফাজতকে সন্তুষ্ট করতেই ২০১৩ সালে ‘তথ্য ও প্রযুক্তি আইন ২০০৬’ এর সংশোধনী এনে সর্বোচ্চ সাজা বাড়িয়ে ১৪ বছর এবং সর্বনিম্ন সাজা ৭ বছর করা হয়। হেফাজতে ইসলাম ও ওলামা লীগের মতো উগ্র মৌলবাদীদের দাবির মুখে সরকারি প্রতিষ্ঠান বাংলা একাডেমি ২০১৫ সালে রোদেলা প্রকাশনী এবং ২০১৬ সালে ব-দ্বীপ প্রকাশনীকে বইমেলা থেকে নিষিদ্ধ করে। এছাড়া ২০১৬ সালে ব-দ্বীপ প্রকাশনীর প্রকাশককে ৫৭ ধারায় গ্রেফতারও করা হয়। বস্তুত ২০১৩ সাল থেকেই ‘ধর্মীয় অনুভূতিতে’ আঘাতের এইরকম কথিত অভিযোগে ৫৭ ধারায় গ্রেফতার অব্যাহত রয়েছে। স্কুলশিক্ষক, দর্জি, আদিবাসী, ছাত্র, বিশেষ করে ধর্মীয় সংখ্যালঘু জনগোষ্ঠীর ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে এরকম ষড়যন্ত্রমূলক অভিযোগের মাধ্যমে গ্রেফতারের ঘটনাও আমরা প্রত্যক্ষ করেছি। কেউ একবার এই অভিযোগে গ্রেফতার হলে, তিনি ধর্ম অবমাননাকারী হিসাবে চিহ্নিত হয়ে যান এবং তাকে প্রাণনাশের হুমকী মাথায় নিয়ে জীবনযাপন করতে হয়। সর্বশেষ আক্রমণে এরকমই একজন, ৫৭ ধারায় মামলাপ্রাপ্ত হিন্দু দর্জি জঙ্গীদের চাপাতির আঘাতে খুন হন। এসব কালাকানুন এবং সরকারের কর্তাব্যক্তিদের ক্রমাগত ‘সীমা লংঘন’ না করার হুমকি, বিপন্ন লেখক ও ব্লগারদের নিরাপত্তা সহায়তার জন্যে পুলিশের শরণাপন্ন হওয়ার সকল পথ বন্ধ করা হয়েছে। একদিকে জঙ্গীদের ভয়, অন্যদিকে ৫৭ ধারায় গ্রেফতারের ভয় - উভয় সংকটে পড়ে আজ মুক্তমনা লেখক, ব্লগার ও প্রকাশকদের ব্যক্তিগত, পারিবারিক, সামাজিক ও মানসিক জীবন মারাত্মকভাবে বিপর্যস্ত।
আমরা ইসলামি জঙ্গিগোষ্ঠীর হাতে নির্মমভাবে হত্যাকাণ্ডের শিকার হওয়া বাংলাদেশের লেখক, ব্লগার, প্রকাশক ও এক্টিভিস্টদের লেখালেখির জন্য দায়ি করে বাংলাদেশ সরকারের বিভিন্ন পর্যায় হতে প্রদত্ত বক্তব্যের তীব্র নিন্দা জানাচ্ছি। আমরা বাংলাদেশ সরকারের প্রতি আহবান জানাচ্ছি - তারা যেন ধর্ম, বিশ্বাস ও মতপ্রকাশের স্বাধীনতা ও অধিকার রক্ষায় দ্রুত যথাযথ পদক্ষেপ গ্রহণ করেন। সাম্প্রদায়িক মৌলবাদী তথা যাবতীয় ইসলামপন্থী ও জঙ্গীবাদী রাজনৈতিক দল ও গোষ্ঠীর সাথে সকল প্রকার সম্পর্ক ছিন্ন করে নিজেদের অবস্থান পরিস্কার করার জন্য সরকার ও ক্ষমতাসীন বাংলাদেশ আওয়ামীলীগের প্রতি জোরালো আহ্বান জানাই। ইসলামপন্থী ও জঙ্গীবাদী রাজনৈতিক দলগুলোর সাথে সম্পর্ক ছিন্ন করার জন্য দেশের বৃহত্তম বিরোধীদল বিএনপি’র প্রতি আহ্বান জানাই। আমরা বিবদমান রাজনৈতিক শক্তিসমুহকে জঙ্গীবাদ দমনের প্রশ্নে ঐক্যবদ্ধ অবস্থান গ্রহণের আহ্বান জানাচ্ছি। সাম্প্রদায়িকতা, মৌলবাদ ও জঙ্গীবাদের বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধ প্রতিবাদে সামিল হওয়ার জন্য দেশের বুদ্ধিজীবি, লেখক, সাংবাদিক, শিক্ষক, ছাত্র, সংস্কৃতি কর্মীসহ সকল শ্রেণী পেশার মানুষের প্রতি আহ্বান জানাই।

একই সাথে আমরা দাবি জানাচ্ছি-

১। বাংলাদেশে এ যাবৎ সংঘটিত লেখক, ব্লগার, অনলাইন একটিভিস্ট, ভিন্ন ধর্ম ও মতে বিশ্বাসী, সমকামী আন্দোলনের কর্মী এবং নাস্তিক- মুক্তমনাদের হত্যা ও হত্যাপ্রচেষ্টার সাথে জড়িতদের অবিলম্বে গ্রেফতার করে দ্রুত বিচারের ব্যবস্থা করতে হবে।
২। দেশের সর্বস্তরের মানুষের জান-মালের নিরাপত্তার সকল দায়িত্ব সরকারকেই নিতে হবে। ধারাবাহিক আক্রমণের শিকার মুক্তমনা ও সেক্যুলার লেখক, ব্লগার, প্রকাশক, ভিন্ন ধর্ম ও মত-পথে বিশ্বাসী, আদিবাসী জনগোষ্ঠীর নিরাপত্তায় কার্যকরী ব্যবস্থা নিতে হবে। সরাসরি হুমকিপ্রাপ্ত লেখক, ব্লগার, শিক্ষক, আন্দোলনকর্মী, শিল্পী, সংস্কৃতিকর্মী, সংখ্যালঘু সংগঠনের সাথে জড়িতদের জন্য জরুরি উদ্যোগে বিশেষ নিরাপত্তার ব্যবস্থা করতে হবে।
৩। সংবিধান বর্ণিত বিবেক ও চিন্তার স্বাধীনতা এবং ধর্মীয় স্বাধীনতা নিশ্চিত করতে হবে। রাষ্ট্রের সকল নাগরিকের সমানভাবে ধর্ম পালন ও প্রচারের সংবিধান প্রদত্ত অধিকার সংখ্যালঘু ধর্মীয় সম্প্রদায় ও অবিশ্বাসী- নাস্তিক- মুক্তমনাদের জন্যও সমানভাবে প্রযোজ্য হবে। সংবিধানের ৮, ১২ ও ২৮ ধারার সাথে সাংঘর্ষিক ‘প্রজাতন্ত্রের রাষ্ট্রধর্ম ইসলাম’ সম্বলিত ২(ক) ধারা বাতিল করতে হবে। সংবিধানের ৩৯ ধারার চিন্তা ও বিবেকের স্বাধীনতা এবং বাক-ভাব প্রকাশ ও সংবাদপত্রের স্বাধীনতার মৌলিক অধিকারের সাথে সাংঘর্ষিক ‘তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি আইন, ২০০৬’ (২০১৩ সালে সংশোধিত) এর ৫৭ ধারা বাতিল করতে হবে।
৪। ফেসবুক-টুইটারসহ বিভিন্ন সামাজিক মাধ্যমে সেক্যুলার ব্লগারদের প্রকাশ্যে হত্যার হুমকী প্রদানকারী উগ্র মৌলবাদী ব্যক্তিবর্গকে শনাক্ত করে আইনের আওতায় আনতে হবে। অনলাইন, মুদ্রিত গণমাধ্যম এবং টিভি চ্যানেলে জঙ্গীবাদী প্রবণতা এবং লেখক- ব্লগার- শিক্ষক- সংখ্যালঘু জনগোষ্ঠীর প্রতি হুমকিমূলক উস্কানি প্রভৃতিকঠোরহস্তে দমন করতে হবে।
৫। জামায়াতে ইসলামী, ওলামালীগ ও হেফাজতে ইসলামসহ জঙ্গীবাদের সাথে যুক্ত সকল সাম্প্রদায়িক দল এবং ইসলামি উগ্রপন্থী গোষ্ঠী নিষিদ্ধ করতে হবে এবং নিষিদ্ধ ঘোষিত জঙ্গীবাদী গোষ্ঠীর সকল ধরনের কর্মতৎপরতা প্রতিহত করতে সরকারকে সর্বশক্তি প্রয়োগ করতে হবে। রাজনীতিতে ধর্মের ব্যবহার আইন করে নিষিদ্ধ করতে হবে।
৬। সরকার ও প্রশাসনের পক্ষ থেকে নিহত ও আক্রান্ত ব্যক্তিদের লেখালেখির জন্য কিংবা তাদের কর্মকাণ্ডের জন্য দোষারোপ বন্ধ করতে হবে। মুক্তমনা লেখক, প্রকাশক, ব্লগার ও অনলাইন এক্টিভিস্ট এবং সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের শিক্ষকসহ পেশাজীবি ব্যক্তিদের কথিত ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাতের অভিযোগে গ্রেফতার ও হয়রানি বন্ধ করতে হবে এবং ব-দ্বীপ প্রকাশনীর প্রকাশক শামসুজ্জোহা মানিকসহ গ্রেফতারকৃত সকল সেক্যুলার লেখক, ব্লগার, প্রকাশক, অনলাইন এক্টিভিস্ট এবং সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের শিক্ষকসহ বিভিন্ন পেশাজীবি ব্যক্তিদের অবিলম্বে নিঃশর্ত মুক্তি দিতে হবে।
৭। কওমি মাদ্রাসাসমূহের ওপর রাষ্ট্রীয় নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠা করতে হবে এবং মাদ্রাসার পাঠ্যসূচি থেকে সকল প্রকার সালাফি, ওহাবি ও মওদুদীবাদী মতাদর্শ বাতিল করতে হবে। জামায়াতে ইসলামী এবং অন্যান্য মৌলবাদী সংগঠন পরিচালিত বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, কিন্ডার গার্টেন স্কুল, কোচিং সেন্টার এবং আর্থিক প্রতিষ্ঠানসমূহকে সরকারের নিয়ন্ত্রণে নিতে হবে। পাঠ্যপুস্তকে বিশেষ কোনও ধর্ম শিক্ষা দিয়ে গোড়ামী এবং ধর্মান্ধতা সৃষ্টির পরিবর্তে সকল ধর্মমত ও যুক্তিসিদ্ধ মতবাদসমূহ যুগপৎ শিক্ষার সুযোগ দিতে হবে। জঙ্গী উৎপাদনের সুযোগ বন্ধ করতে, প্রয়োজনে মাদ্রাসাসমূহ নিয়ন্ত্রণের জন্য বিশেষ আইন প্রণয়ন করতে হবে।
৮। জুম্মাহর খুৎবা ও ওয়াজ মাহফিলে উগ্র মৌলবাদী প্রচারণা, অন্য ধর্মালম্বীদের প্রতি বিষোদগার ও জঙ্গীবাদ সংগঠিত করার সুযোগ বন্ধ করতে হবে। গণমাধ্যমে একক ধর্মীয় মতাদর্শ প্রচার করে ধর্মান্ধতা সৃষ্টির পরিবর্তে মানুষকে নির্মোহভাবে সকল ধর্মমত জানার সুযোগ দিতে হবে। তুলনামূলক ধর্মতত্ত্ব, নাস্তিক্যবাদ, মানবতাবাদ, যুক্তিবাদ, দর্শন এবং বিজ্ঞানের উন্মুক্ত প্রচারণার সুযোগ দিতে হবে।
৯। যুদ্ধাপরাধের বিচার ত্বরান্বিত করতে হবে।


                                                        বিবৃতিদাতা ব্লগ ও ব্লগারদের তালিকা
ব্লগসমূহ:
নবযুগ ব্লগ, ইস্টিশন ব্লগ, উইমেন চ্যাপ্টার, মুক্তিযুদ্ধ ই-আর্কাইভ ট্রাস্ট, চুতরাপাতা, ধর্মকারী, ইতুর ব্লগ, অগ্নিরথ প্রমুখ 

লেখক, কবি, ব্লগার ও অনলাইন একটিভিস্ট:
(জ্যেষ্ঠতার ভিত্তিতে নয়, ইংরেজি বানানের বর্ণনানুক্রমিকভাবে নাম সাজানো হয়েছে)
A.Z Hossain (এ,জেড হোসেন)
Abul Kashem (আবুল কাশেম)
Ahmedur Rashid Tutul (আহমেদুর রশীদ টুটুল )
Ajanta Deb Roy (অজান্তা দেব রায়)
Akash Malik (আকাশ মালিক)
Alamgir Hussain (আলমগীর হুসেন)
Allama Shoitan (আল্লামা শয়তান)
Ananya Azad (অনন্য আজাদ)
Anju Ferdousy (আঞ্জু ফেরদৌসী)
Arif Rahman (আরিফ রহমান)
Arifur Rahman (আরিফুর রহমান)
Arpita Roychoudhury (অর্পিতা রায়চৌধুরী)
Ashraful Alam (আশরাফুল আলম)
Asif Mohiuddin (আসিফ মহিউদ্দীন)
Bhajan Sarker (ভজন সরকার)
Bonya Ahmed (বন্যা আহমেদ)
Camelia (ক্যামেলিয়া)
Chorom Udash (চরম উদাস)
Daripalla Dhomadam (দাঁড়িপাল্লা ধমাধম)
Daud Haider (দাউদ হায়দার)
Deepaboli Chowdhury (দীপাবলী চৌধুরী)
Dhrubo Tara (ধ্রুব তারা)
Ekush Tapader (একুশ তাপাদার)
Ettila Etu (ইত্তিলা ইতু)
Farzana Kabir Khan (ফারজানা কবীর খান)
Horus (হোরাস)
Iswar Kona (ঈশ্বর কণা)
Kazi Mamun (কাজী মামুন)
Khalid Hasan Alo (খালিদ হাসান আলো)
Mahbub Leelen (মাহবুব লীলেন)
Mahmudun Nabi (মাহমুদুন নবী)
Mahsina Khatun (মহসিনা খাতুন)
Maskwaith Ahsan (মাস্কাওয়াথ আহসান)
Md. Mumin Banda (মোঃ মুমিন বান্দা)
Milan Farabi (মিলন ফারাবী)
Mohiuddin Sharif (মহিউদ্দিন শরীফ)
Monika Muna (মণিকা মুনা)
Muhammad Golam Sarowar (মোহাম্মদ গোলাম সারওয়ার)
Nastiker Dharmakatha (নাস্তিকের ধর্মকথা)
Nur Nobi Dulal (নুর নবী দুলাল)
Omar Farooq Lux (ওমর ফারুক লুক্স)
Poruya (পড়ুয়া)
Prithu Sanyal (পৃথু স্যন্যাল)
Raihan Abir (রায়হান আবীর)
Rubina Khanam (রুবিনা খানম)
Sabbir Hossain (সাব্বির হোসাইন)
Saikat Barua (সৈকত বড়ুয়া)
Sannyasi Ratan (সন্যাসী রতন)
Sezan Mahmud (সেজান মাহমুদ)
Shahzahan Bachchu (শাহজাহান বাচ্চু)
Shamim Runa (শামীম রুনা)
Shamima Mitu (শামীমা মিতু)
Shammi Haque (শাম্মি হক)
Shantanu Adib (শান্তনু আদিব)
Shohiduzzaman Paplu (সহিদুজ্জামান পাপলু)
Shoikot Chawdhury (সৈকত চৌধুরী)
Shravan Akash (শ্রাবণ আকাশ)
Shubhajit Bhowmik (শুভজিৎ ভৌমিক)
Sobak (সবাক)
Subrata Shuva (সুব্রত শুভ)
Supriti Dhar (সুপ্রীতি ধর)
Susupto Pathok (সুষুপ্ত পাঠক)
Swapan Majhi (স্বপন মাঝি)
Syed Kamran Mirza (সৈয়দ কামরান মির্জা)
Syed Zamal (সৈয়দ জামাল)
Tahsib Hasan (তাহসিব হাসান)
Juliyas Caesar (জুলিয়াস সিজার)
Moon Taslima Sheikh (মুন তাসলিমা শেখ)

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন